♦শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও সরকারি কলেজ গুলোতে পাঠদানের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের জন্ম হয়। কিন্তু জন্মলগ্ন থেকেই নানা প্রতিকূলতার কারণে অন্যান্য ক্যাডারের মতো শিক্ষা ক্যাডারের বিস্তার ঘটেনি। ২৭ ক্যাডারেরই প্রায় বিভাগীয় ,জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে দপ্তর রয়েছে, কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারের কোন দপ্তর না থাকায় মহৎ উদ্দেশ্যে সৃষ্টির পরও কলেজের গণ্ডির মধ্যেই মেধাবী শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের অবসরে যেতে হচ্ছে। এতে মেধাবী কর্মকর্তার সেবা থেকে রাষ্ট্র বঞ্চিত হচ্ছে।
♦মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অফিস থাকলেও উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার প্রজেক্টের মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।প্রকল্প শেষে পদ দুটির অধিকাংশই রাজস্ব ভুক্ত হয়েছে, কিছু প্রক্রিয়াধীন আছে।সদ্য পাশ হওয়া ক্যারিয়ার পাথ অনুযায়ী পদ দুটিতে পিএসসি নিয়োগ দেয়ার পাশাপাশি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও উচ্চমান সহকারীরা পদোন্নতি পেয়ে পদ গুলো পূর্ণ করতে পারবে।
♦জেলা শিক্ষা অফিসার এবং সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার পদ গুলোতে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের পদায়ন দেয়া হয়। পোস্ট দুটি বর্তমানে সরকারি মাধ্যমিকেরই বলা যায়।
♦অধিদপ্তরের আওতাধীন ০৯টি অঞ্চলে ডিডি, বিদ্যালয় পরিদর্শক পদে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরাই পদায়ন পেয়ে থাকেন।উনারা আঞ্চলিক অফিসের ডিডিও শিপের অধিকারী।
♦সেসিপের মাধ্যমে ২০১৫ সালে অঞ্চলে ০৯ টি পরিচালক, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক ডেপুটেশন পদ সৃষ্টি হয়েছে যেখানে শিক্ষা ক্যাডার থেকে পদায়ন করা হয়।এছাড়া পূর্বে আঞ্চলিক অফিসে শিক্ষা ক্যাডার থেকে পদায়ন খুব কমই হয়েছে।
ডিআইএ ব্যতীত এনসিটিবি, শিক্ষাবোর্ড বা অন্যান্য কয়েকটি অফিসে শিক্ষা ক্যাডার থেকে পদায়ন হলেও তা শিক্ষা ক্যাডারের পদ নয়। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর আইন সংশোধন করে শিক্ষা ক্যাডার থেকে স্থায়ী নিয়োগের ব্যবস্থা করা উচিত।
♦বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত শিক্ষার সকল সেক্টরে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের নেতৃত্ব দেয়ার কথা থাকলেও অজানা কারণে শিক্ষা ক্যাডার কলেজের গণ্ডি পার হতে পারছে না।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য শিক্ষা ক্যাডারকে ঢেলে সাজানো উচিত। প্রয়োজনে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে অফিস স্থাপন করে বা পদ সৃষ্টি করে শিক্ষা ক্যাডারের দক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তাদের পদায়ন দেয়া দরকার। শিক্ষার সুফল যেন প্রান্তিক পর্যায়ে পৌছাতে ও দুর্নীতি মুক্ত সমাজ গড়তে উপজেলা ও জেলায় শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের পদায়ন আশু জরুরি।
♦বিপিএটিসিতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় বর্তমানে নায়েমে শিক্ষা ক্যাডারের ০৪ মাসের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ হয়ে থাকে। যা ক্যাডার কর্মকর্তার জন্য উপযুক্ত নয়। ভবিষ্যতে বিপিএটিসি কক্সবাজারে স্থানান্তর হবে। যার আয়তন হবে বিশাল। সেখানে সকল ক্যাডারের সাথে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের সমন্বিত ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা উচিত।
♦শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় বিষয় ভিত্তিক বা অন্যান্য প্রশিক্ষণের জন্য ” বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) একাডেমি ” স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া জরুরি।সেখানে বিসিএস এডমিনিস্ট্রেশন একাডেমি, পুলিশ একাডেমি, ফরেইন সার্ভিস একাডেমি, পোস্টাল একাডেমি, কাস্টমস একাডেমি, জুডিশিয়াল সার্ভিস একাডেমি সহ অন্যান্য ক্যাডারের একাডেমির মতো সংশ্লিষ্ট ক্যাডার বিষয়ে ৬ মাসের প্রশিক্ষণ দেয়া উচিত ।
♦♦জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন SDG 2030 ও ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়ন করতে শিক্ষা ক্যাডারকে ঢেলে সাজানো দরকার । মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় এবং মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহোদয়ের নেতৃত্বে দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষা প্রশাসন গড়তে উপজেলা-জেলা পর্যায়ের অফিসে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের দক্ষ কর্মকর্তাদের পদায়ন দেয়া উচিত। ।
কাওছার আহমেদ,
৩০ তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) কর্মকর্তা।
উপজেলা ও জেলায় শিক্ষা ক্যাডারের পদায়ন জরুরি, জরুরি ট্রেনিং এর সুন্দর ব্যবস্থাপনা