আজ ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা মে, ২০২৪ ইং

‘চোখের সামনে বেঁচে ছিল শিশুটি, উদ্ধার করতে পারলাম না’

রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার চাপায় প্রাইভেটকারে থাকা শিশুসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুইজন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গার্ডার পড়ার পর বেশ কিছুক্ষণ পর্যন্ত প্রাইভেটকারের ভেতরে একটি শিশু বেঁচেছিল। তবে গার্ডার সরানোর কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তাকে উদ্ধার করা যায়নি। পরে ওই শিশু মারা যায়।
ঘটনাস্থলের পাশের একটি ভবনে রড মিস্ত্রীর সহযোগী ইমরান হোসেন ইমন দৈনিক তারুণ্য কে বলেন, ‌আমি দুপুরের খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। তখন দেখলাম গার্ডারটিকে উপরে তোলা হয়েছে, এটাকে একটা বড় গাড়িতে তুলবে। রাস্তা খোলা ছিল, কাজও চলছিল। হঠাৎ বিকট শব্দে প্রাইভেট কারের ওপর পড়ে গেল গার্ডারটি। প্রাইভেটকারের পেছনে একটি বাস ছিল, বাসটি দ্রুত ব্রেক করে বামে সাইড করে ফেলে।
তিনি বলেন, এরপর আমরা ৫-৬ জন রড-শাবল নিয়ে এসে গার্ডার সরানোর চেষ্টা করি। এ সময় এক যুবক গাড়ির ভেতর থেকে বের হন। তার মাথা ফেটে গেছে। এরপর গাড়ির দরজা ভেঙে এক নারীকে উদ্ধার করি। তিনি বের হয়ে কান্নাকাটি করছিলেন। আমরা ভেতরে একটি শিশুকে দেখতে পেয়েছিলাম, শিশুটি বেঁচে ছিল। সে হাত-পা নাড়াচ্ছিল। কিন্তু গার্ডার সরাতে পারিনি বলে তাকে বাঁচাতে পারিনি।
ইমরান বলেন, ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা উদ্ধার কাজ শুরু করে। কিন্তু গার্ডার এত ভারী যে কেউ কিছুই করতে পারছিল না। ঘণ্টাখানেক পর বিভিন্ন বাহিনী এসে উদ্ধার কাজ শুরু করে। তারাও ২-৩ ঘণ্টা ধরে চেষ্টা করেও কাউকে বের করতে পারেনি।
প্রাইভেটকারে একই পরিবারের সাত সদস্য ছিলেন। তাদের মধ্যে ৫ জন মারা গেছেন। তারা হলেন- রুবেল (৬০), ফাহিমা (৪০), ঝরনা (২৮), জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। শুধু বেঁচে গেছেন হৃদয় ও রিয়া মনি নামের নবদম্পতি। তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে উত্তরা জসীম উদ্দীন এলাকায় আড়ংয়ের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটলেও মরদেহগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয় সন্ধ্যা ৭টার দিকে। গার্ডারের নিচে প্রাইভেটকার চাপা পড়ে থাকায় মরদেহ বের করা সম্ভব হচ্ছিল না। পরে এক্সেক্যাভেটর দিয়ে গার্ডার সরিয়ে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ