বর্ষাকাল শুরু হলেও বৃষ্টির দেখা মিলছে না তেমন। এদিকে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপ এখনও বিদায় নেয়নি। তীব্র গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত যেন! এ সময়ে একটু সচেতন না হলেই দেখা দিতে পারে নানা অসুখ-বিসুখ। কারণ আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে হয়।
সে জন্য দরকার পুষ্টিকর ও উপকারী খাবার খাওয়া। গরমে শরীর ও মন শীতল রাখতে পারে এ সময়ের কিছু ফল। এগুলো পুষ্টিমানে যেমন অনন্য, তেমনই স্বাদে ভরপুর। কাগজে-কলমে গ্রীষ্ম বিদায় নিলেও গ্রীষ্মের অনেক ফল এখনও পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। করোনাভাইরাসসহ যে কোনো সংক্রমণ প্রতিরোধে বাড়ানো প্রয়োজন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এ কাজে আপনাকে সাহায্য করবে মৌসুমি ফলগুলো।
আম: আম কেবল মিষ্টি স্বাদের জন্যই নয় বরং এর পুষ্টিকর বৈশিষ্ট্যের জন্যও পরিচিত। প্রোটিন, ভিটামিন এ, বি-৬, সি, আয়রন, ফোলেট, ম্যাগনেসিয়াম, রাইবোফ্লাভিন এবং ডায়েটি ফাইবার জাতীয় স্বাস্থ্য সমৃদ্ধকারী পুষ্টিতে ভরপুর এই ফল। আমে বিশটিরও বেশি ভিটামিন এবং খনিজ থাকে, যা একে সুপারফুড হিসেবে তৈরি করতে সহায়তা করে। ৩/৪ কাপ আম আপনার প্রতিদিনের ভিটামিন সি-এর ৫০ শতাংশ, ভিটামিন এ-এর ৮ শতাংশ এবং ভিটামিন বি-৬-এর ৮ শতাংশ সরবরাহ করে। তৃষ্ণা নিবারণের জন্য পাকা আম, আমের রস, আমের লাচ্ছির চেয়ে ভালো উপায় নেই। আম দিয়ে তৈরি করা যায় নানা স্বাদের শরবত, কুলফি, আইসক্রিম ইত্যাদি।
কাঁঠাল: এ মৌসুমের আরেকটি সুস্বাদু ফলের নাম কাঁঠাল। গ্রামে কিংবা শহরে অথবা বাজারে আপনার সঙ্গে এ ফলের দেখা হবেই। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল। কাঁঠালে আছে প্রচুর পরিমাণে থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, সোডিয়াম, জিঙ্ক এবং নায়াসিনসহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান। অন্যদিকে কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও ভিটামিন থাকায় শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী ফল। কাঁঠালে চর্বির পরিমাণ অনেক কম। এ ফল খাওয়ার কারণে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা সবচেয়ে কম। এটি উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
লিচু: রসে টইটম্বুর একটি ফলের নাম লিচু। বাইরের লাল রঙের আবরণের নিচে থাকে সাদা রঙের মিষ্টি একটি মাংসালো অংশ। লিচুতে রয়েছে প্রচুর শ্বেতসার, ভিটামিন ও খনিজ লবণ। লিচুতে ভালো পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে। এটি পুষ্টির একটি সমৃদ্ধ উৎস যা রক্তের উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয়। এতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। আছে প্রচুর পটাশিয়াম, যা সোডিয়াম স্তর বজায় রাখতে প্রয়োজনীয়। এটি রক্তচাপ বজায় রাখতে সহায়তা করে। স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি হ্রাস করে। এছাড়াও এতে ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, তামা এবং ফোলেট জাতীয় খনিজ রয়েছে যা রক্তচাপ বজায় রাখে।
Leave a Reply