আজ ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

সুশাসন নিশ্চিতে আমুল পরিবর্তন আসছে জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিতে

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি উন্নত করতে এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভায় ই-ভোটিং নিশ্চিত করছে। এক্ষেত্রে   জেড ক্যাটাগরির কোম্পানির এজিএম এ  ই-ভোটিং বাধ্যতামূলক হচ্ছে। তবে তালিকাভুক্ত অন্যন্য ক্যাটাগরির কোম্পানির ক্ষেত্রে এই বিষয়টি ঐচ্ছিক রাখা হয়েছে। সম্প্রতি বিএসইসি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এজিএম এবং ইজিএমের এজেন্ডায় শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি নিশ্চিত করতে এবং প্রশাসনের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ইলেকট্রনিক ভোটিং সিস্টেমটি ব্যবহার করতে যাচ্ছে বিএসইসি।

এবিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলাম অর্থসংবাদকে বলেন, “শেয়ারবাজারের সমস্ত কার্যক্রম ডিজিটাইজড করার জন্য আমাদের দু’বছর প্রয়োজন। আমরা বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ করছি। ই-ভোটিং এর মধ্যে একটি।আমরা ইতিমধ্যে অনলাইন সিস্টেমে বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার অনুমোদন দিয়েছি। কিছু কোম্পানি ভাল করছে এবং জেড গ্রুপ থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে।যারা ভালো করছেন না আমরা তাদের নার্সিং করে সহায়তা করতে চাই।

তিনি বলেন, “প্রথমত, আমরা কেবল জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোকে ই-ভোটিং সিস্টেমটি ব্যবহার করে শেয়ারহোল্ডার মিটিং করতে বাধ্য করছি। তার পরে, অন্যান্য ক্যাটাগরির কোম্পানিও এ নিয়ম মেনে চলবে। এর ফলে দুর্বল কোম্পানিগুলো এজিএম এ তাদের পক্ষে এজেন্ডা পাস করতে প্রভাবিত করতে পারবে না। সুতরাং, পদের উপযুক্ত নয় এমন পরিচালকরা বছরের পর বছর ধরে চালিয়ে যেতে পারবেন না।বিনিয়োগকারীদের একটি ভাল বোর্ড অফ ডিরেক্টর প্যানেল নির্বাচনের ভোট দেওয়ার অধিকার থাকবে। বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা ই-ভোটিং পদ্ধতিতে অংশ নিতে এবং কোম্পানি সম্পর্কে তাদের মতামত দিতে সক্ষম হবে।ভোটিং সিস্টেমের মাধ্যমে বিদ্যমান পরিচালনা পর্ষদগুলি প্রতিস্থাপন করা হবে এবং কোম্পানিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

কমিশন সূত্র মতে, ই-ভোটিং সিস্টেমের কারণে বিশেষত পরিচালনা পর্ষদের কারণে কোম্পানিগুলোতে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমূল পরিবর্তন দেখা যাবে। কোম্পানিগুলোতে ছয় মাসের মধ্যে তাদের এজিএম করতে হবে বিনিয়োগকারীরা ই- ভোটিং এর মাধ্যমে এজিএম এবং ইজিএম সম্পর্কিত কোম্পানির এজেন্ডায় অনলাইনে ভোট দিতে পারবেন। কোনও বিনিয়োগকারী যদি রেকর্ডের তারিখ এবং এজিএম-এ ভোট দেওয়ার আগ পর্যন্ত কোনও কোম্পানির ১০ টি শেয়ার রাখেন, তাহলে তিনি ১০ টি ভোট দিতে পারবেন।

জানা গেছে, প্রতিটি কোম্পানির নির্ধারিত সভার তারিখের এক সপ্তাহ আগে তার ওয়েবসাইটে সভার এজেন্ডা সহ একটি ই-ভোটিং প্ল্যাটফর্ম আপলোড করতে হবে। কমিশন এ ধরণের বৈঠকের জন্য ই-ভোটিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে। জেড ক্যাটাগরির কোম্পানির শর্তও সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। জেড ক্যাটাগরির কোম্পানির স্পনসর এবং পরিচালকরা তাদের তাদের ধারন করা শেয়ার বিক্রয়, স্থানান্তর, হস্তান্তর এবং করতে পারবেন না।

সুত্র মতে, দু’বছর ধরে জেড বিভাগে থাকা সংস্থাগুলি তাদের পরবর্তী পরিচালনা পর্ষদটি আগামী ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে সংস্কার করতে হবে। তারা যদি এটির সংস্কার করতে ব্যর্থ হয় তবে সেই স্পনসর এবং পরিচালকরা অন্য তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালক হিসাবে থাকতে পারবেন না। সুশাসন নিশ্চিত করতে কমিশন বিশেষ নিরীক্ষক এবং পর্যবেক্ষকও নিয়োগ করবে। এ ছাড়া জেড ক্যাটাগরির কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সংস্কারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রক সুশাসন নিশ্চিত করবে।

যদি সংস্কারকৃত পরিচালনা পর্ষদ টানা চার বছরের মধ্যে কোম্পানির সামগ্রিক অবস্থার উন্নতি করতে ব্যর্থ হয়, তবে তাদেরকে তালিকাচ্যুত করবে এবং বিএসইসি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। শিগগিরই এই বিষয়ে নতুন নির্দেশ জারি করে কমিশন তার পূর্ববর্তী আদেশ ও বিজ্ঞপ্তিগুলি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।

ইতোমধ্যে তালিকাভুক্ত কোম্পানি গ্রামীণফোন লিমিটেড ই-ভোটিং সিস্টেমটি ব্যবহার করে একটি বার্ষিক সাধারণ সভা করেছে।

বর্তমানে ৫৩ টি তালিকাভুক্ত কোম্পানি জেড গ্রুপে রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি কোম্পানি বছরের পর বছর লভ্যাংশ না দিয়ে বিনিয়োগকারীদের সাথে প্রতারণা করছে।

সূত্র – অর্থ সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ