বন্ধুত্বকে উপলব্ধি করার মতো এর চেয়ে গভীর কথামালা আর শ্রুতিমধুর গান মনে হয় আর নেই।যে গান বারবার শুনেছি, গানের চরিত্রগুলোকে নিজের মতো করে কল্পনা করেছি, ভালোবেসেছি….
বিবিসি জরিপে বাংলা ভাষার ২০ টি শ্রেষ্ঠ গানের মধ্যে ৪ নং স্থানে আছে উপমহাদেশের কিংবদন্তি সঙ্গিতশিল্পী মান্না দে’র গাওয়া সর্বাধিক আলোচিত গানের একটি ‘কফি হাউসের সেই আড্ডাটা’
“কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই, আজ আর নেই,
কোথায় হারিয়ে গেল সোনালী বিকেলগুলো সেই, আজ আর নেই।
নিখিলেশ প্যারিসে মঈদুল ঢাকাতে নেই তারা আজ কোনো খবরে”
কাগজের রিপোর্টার মঈদুল এসে রোজ, কী লিখেছে তাই শুধু পড়তো’ ।
গানটির গীতিকার গৌরিপ্রসন্ন মজুমদার এবং সুরকার সুপর্ন কান্তি ঘোষ। কোলকাতার কলেজস্ট্রিটে ১৯৪৩ সালে প্রতিষ্ঠিত কফি হাউজের আড্ডা এ উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে উজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছে।
মঈদুলের প্রকৃত নাম নূর আহমেদ মঈদুল। তিনি ১৯৩৬ সালের ১৩ জানুয়ারি পশ্চিম বঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়ার সময়ে বন্ধুত্ব হয় গৌরিপ্রসন্ন মজুমদার নিখিলেশ,অমলদের সঙ্গে। ভালো খেলোয়াড় হিসাবে কোলকাতায় তাঁর সুনাম ছিলো।
১৯৬৪ সালে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সময় সপরিবারে ঢাকায় চলে আসেন মঈদুল। ঢাকায় এসে তিনি ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব এবং ইকবাল স্পোর্টিং ক্লাবে ফুটবল ও ব্যাডমিন্টন খেলেছেন। হকি, ভলিবল ও অ্যাথলেটিক্সে ছিলেন সমান উজ্জ্বল। ছিলেন ক্রিড়া ধারাভাষ্যকারও। কাগজের রিপোর্টার মঈদুল, সাংবাদিকতা করেছেন দৈনিক আজাদ, ইত্তেফাক, দৈনিক বাংলা, ইনকিলাব, সংবাদ, বাংলার বানী আর দৈনিক পূর্বদেশে। সিনেমা আর মঞ্চের জগতেও ছিল তাঁর উপস্থিতি।মঈদুলের কফি হাউজের সোনালী বিকেল হারিয়ে গেছে অনেক আগেই।এখন মঈদুলের বিকেল কাটছে ঢাকার একটি হাসপাতালে।
Leave a Reply